দ্বিজ কানাই: নদের চাঁদ ও মহুয়ার প্রেমকবি


ভূমিকা

বাংলার লোকসাহিত্যে প্রেম ও বেদনার অনুপম মূর্তিতে আবির্ভূত এক নাম দ্বিজ কানাই। তাঁর লেখা ‘নদের চাঁদ’ ও ‘মহুয়া’ কেবল পালাগান নয়—সেই সময়ের সমাজবাস্তবতা, আবেগ, এবং গভীর প্রেমচেতনার আখ্যান। ড. দীনেশচন্দ্র সেন তাঁর সাহিত্য সম্পর্কে গভীর শ্রদ্ধা ও আলোচনায় স্থান দিয়েছেন, যা তাকে একজন কালজয়ী লোককবির স্বীকৃতি দেয়।

জন্ম

দ্বিজ কানাইয়ের জন্ম ভাওয়াল পরগণায়। যদিও পরবর্তী জীবনে তিনি জন্মস্থান ত্যাগ করে উত্তর-পূর্ব ময়মনসিংহ (বর্তমান নেত্রকোণা) অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন। তার জীবনের এই স্থানান্তর ছিল প্রেমঘটিত বিশেষ পরিস্থিতির ফল।

পাণ্ডিত্য ও সাহিত্যচর্চা

দ্বিজ কানাই মূলত পালাগান রচয়িতা হিসেবে পরিচিত। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনিকে নিজের অভিজ্ঞতা, কল্পনা ও প্রেমময় ভাষায় রূপ দিয়ে তিনি এগুলিকে পালা হিসেবে রচনা করতেন এবং এগুলো গান আকারে পরিবেশিত হতো তার সম্পর্কে যে প্রবাদ প্রচলিত তাতে জানা যায়, তিনি বর্ণবিভক্ত সমাজে উচ্চবর্ণ তথা ব্রাক্ষণশ্রেণির অন্তভুক্ত হলেও নিম্নবর্ণ অর্থাৎ শূদ্রশ্রেণীর প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। 'মহুয়া' পালাগান (১৬৫০ সাল) রচনায় তার যে উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে তার মূলে তার ব্যক্তি জীবনের সংস্কারমুক্ত মানবিক বোধ সক্রিয় বলে ধারণা করা হয়। পালাগানটিতে মোট ৭৮৯ ছত্র আছে, যেগুলোকে দীনেশচন্দ্র সেন ২৪টি অধ্যায়ে বিভক্ত করেছেন।প্রেম, ত্যাগ এবং জীবনসংগ্রামের প্রতিচ্ছবি দ্বিজ কানাইয়ের সাহিত্য।

সহায়ক গ্রন্থ:

নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ – অনুপ সাদি ও দোলন প্রভা – ২০২৪ 
ময়মনসিংহের চরিতাভিধান, দরজি আবদুল ওয়াহাব, প্রকাশক গ্রন্থকার, ময়মনসিংহ, প্রথম প্রকাশ এপ্রিল ১৯৮৯ নেত্রকোণা জেলার ইতিহাস, আলী আহাম্মদ খান আইয়োব, বইপত্র, ঢাকা, প্রকাশকাল ফেব্রুয়ারি ২০২৪

উইকিপিডিয়া - বিস্তারিত 
নবীনতর পূর্বতন