চন্দ্রকুমার দে (১৮৮৯–১৯৪৭)
চন্দ্রকুমার দে ছিলেন বিশ্বসাহিত্যের কাব্যভাণ্ডারে অমূল্য সম্পদ, ময়মনসিংহ গীতিকার মহান সংগ্রাহক ও লেখক। তিনি নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়ার আইথর গ্রামে ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অল্পশিক্ষিত, অনাথ, স্বল্পশক্তির যুবক চন্দ্রকুমার জীবনের নানা বাঁকে গিয়ে হয়ে ওঠেন বাংলার লোকসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ সংগ্রাহক।
প্রারম্ভিক জীবন ও সংগ্রাম
গ্রামের মুদির দোকানে মাসিক এক টাকা বেতনে কর্ম শুরু, পরে তহশিলদার হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘোরার সুবাদে পালাগানের প্রেমে পড়েন।
সাহিত্যজগতে পদার্পণ
‘সৌরভ’ পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশের মাধ্যমে সাহিত্যপ্রেমীদের নজর কাড়েন। ড. দীনেশ চন্দ্র সেন তাঁর প্রতিভা দেখে ১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন পালাগান সংগ্রাহক হিসেবে।
মৈমনসিংহ গীতিকা ও অবদান
মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী, কমলা, দস্যু কেনারাম প্রভৃতি ১০টি পালা এবং পরবর্তী সময়ে পূর্ববঙ্গ গীতিকার অন্তর্গত ১৫টি গীতিকা সংগ্রহ করে বাংলা সাহিত্যের অমর ঐতিহ্য নির্মাণ করেন।
গবেষণা ও সাহিত্যচর্চা
‘মহিলা কবি চন্দ্রাবতী’ প্রবন্ধ তাঁর লেখকসত্তার উৎকর্ষের পরিচয় দেয়। এছাড়া লোহার মাঞ্জস, কবিতা, প্রবন্ধ, গল্প ও পালাগানের সম্পাদনায় ছিল তাঁর অসাধারণ ভূমিকা।
চন্দ্রকুমার: লোকসাহিত্যের অনন্য পথিকৃৎ
গ্রামীণ জীবনের গভীরে প্রবেশ করে, সরল কৃষকসমাজ থেকে সংগ্রহ করে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন অনন্য ঐতিহ্যে।
উৎস নির্দেশ
সহায়ক গ্রন্থ: নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ – অনুপ সাদি ও দোলন প্রভা – ২০২৪
নেত্রকোণা মুখশ্রী, কাজী ইমদাদুল হক সম্পাদিত, প্রকাশক নেত্রকোণা জেলা সমন্বয় পরিষদ, ঢাকা, প্রকাশকাল মার্চ ২০০৫
ময়মনসিংহের চরিতাভিধান, দরজি আবদুল ওয়াহাব, প্রকাশক গ্রন্থকার, ময়মনসিংহ, প্রথম প্রকাশ এপ্রিল ১৯৮৯