ভূমিকা
খালেকদাদ চৌধুরী (২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৭ – ১৬ অক্টোবর ১৯৮৫) ছিলেন নেত্রকোণার খ্যাতিমান সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। সাহিত্যের পাশাপাশি তিনি রাজনীতি ও সমাজকর্মেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
জন্ম ও পরিবার
তিনি নেত্রকোণা জেলার আটপাড়া উপজেলার সোনাজোড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম নওয়াব আলী চৌধুরী ও মাতার নাম নাজমুন্নেছা চৌধুরী। তবে তাঁর জন্ম হয় মদন উপজেলার চানগাঁও গ্রামে, নানাবাড়িতে। তিনি ছিলেন গাজী আসকরের পঞ্চম অধস্তন পুরুষ।
শিক্ষাজীবন
নাজিরগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করে দত্ত হাইস্কুল থেকে ১৯২৪ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে কলকাতার রিপন কলেজ ও ইসলামিয়া কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ইংরেজিতে অনার্স করেন।
সাংবাদিকতা ও বিপ্লবী জীবন
কলকাতায় লেখাপড়ার সময় সাংবাদিকতায় যুক্ত হন ও বিপ্লবী রাজনীতির সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন। দৈনিক কৃষক, নবযুগ-এ লিখেছেন; ‘আতসবাজ’ নামে শিশুসাহিত্যে লিখেছেন কাজী নজরুল ইসলামের উৎসাহে।
কর্মজীবন
তিনি মিডল্যান্ড ব্যাংকে কর্মজীবন শুরু করে সরকারি প্রচার বিভাগে চাকরি করেন। কর্মসূত্রে নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও সিলেটে দায়িত্ব পালন করেন।
সাহিত্যচর্চা
তিনি ছিলেন মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত, সৃজনী ও উত্তর আকাশের নিয়মিত লেখক ও সম্পাদক। প্রবন্ধ, উপন্যাস, অনুবাদ, আত্মজীবনী সব শাখায় তাঁর অবদান আছে।
প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ
- একটি আত্মার অপমৃত্যু
- চাঁদবেগের গড়
- রক্তাক্ত অধ্যায়
- সাপমারির অভিশাপ
- বিশ্ব সাহিত্য পরিচয়
- অভিশপ্ত মসনদ (নাটক)
- মরু সাহারা (অনুবাদ)
- শতাব্দীর দুই দিগন্ত (আত্মজীবনী)
সামাজিক অবদান
তিনি 'মধুমাছি কচিকাঁচার মেলা'র অন্যতম পৃষ্ঠপোষক, রেড ক্রিসেন্ট নেত্রকোণার সম্পাদক এবং ‘নেত্রকোণা সাধারণ গ্রন্থাগার’ এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার – ১৯৮৩
- মরণোত্তর একুশে পদক – ২০১৮
মৃত্যু
খালেকদাদ চৌধুরী ১৬ অক্টোবর ১৯৮৫ সালে ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
উৎস নির্দেশ
উইকিপিডিয়া - বিস্তারিত ওয়েবসাইটে
ময়মনসিংহের চরিতাভিধান
নেত্রকোণা মুখশ্রী
সহায়ক গ্রন্থ: নেত্রকোণা জেলা চরিতকোষ – অনুপ সাদি ও দোলন প্রভা – ২০২৪